সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:-

মধ্যেরাত থেকে সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু

আল আমিন, রাঙ্গাবালী ( পটুয়াখালী)  প্রতিনিধি >>

এই বন্যা গেছে দুইদিনও হয় নাই এর মধ্যেই আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য সাগরে যেতে পারি নাই। এখন যাবো সাগরে ট্রালার বাজার করে সব রেডি করছি এর মধ্যেই শুনি নিষেধাজ্ঞা। এভাবে হলে তো আমাদের পেটে ভাত জুটবেনা মরতে হবে না খেয়ে, এমন অবস্থা হইছে আমারে পোলাপান (ছেলে সন্তান) নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। এছাড়া কোন উপায় নাই, চোখমুখে হতাশার ছাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন সাগরে মাছ ধরার মাঝি খোকা মাঝি। তিনি আরও বলেন, আমাদের বিভিন্ন সংস্থার থেকে ঋণ আনা এই ঋণ আমরা কিভাবে শোধ করবো। সংস্থা অফিসারের আমাদের বাড়ি এসে বসে থাকে কিস্তি নেওয়ার জন্য। এখন কিভাবে খাবো আর কিভাবে কিস্তি দিবো সেই চিন্তা এখন। সুদু খোকা মাঝি না এমন শত শত জেলে আছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া, চরমোন্তাজ, মৌডুবিও চালিতাবুনিয়া। আজ মধ্যরাত (২০ মে) থেকে ৬৫ দিনের জন্য সমুদ্রে সকল ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।
কর্মহীন এ সময়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মৎস্যজীবীরা। হালনাগাদ তালিকা না থাকায় সরকার ঘোষিত প্রনোদনা পাচ্ছেনা অধিকাংশ জেলে। বিকল্প কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণ করে ভরা মৌসুমে জেলেদের মৎস্য আহরনের সুযোগ করে দেয়ার দাবী সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, টানা ৬৫ দিনের সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকবে। সেজন্য ঘাটে ট্রালার নঙ্গর করে অনেকে জাল উঠাতে শুরু করেছে। আবার অনেক জেলে ট্রালার আছে তারা সাগরেই যেতে পারে নাই। ঘর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে। জানা যায়, এখনো অনেক জেলে ট্রালার রয়েছে সাগরে আবার কেউ ঘাটে আসতে শুরু করেছে।
এসময় কথা হয় কোড়ালিয়া জেলে মন্নানের সাথে তিনি বলেন, আমাদের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় আমরা মেনে চলি,কিন্তু ভারত তো মাছ ধরে। এই সময়টা মাছ ধরার মৌসুম আর আমাদের এই সময় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, আমরা যে এখন কি করবো আর কেমনে বাচঁবো সেই চিন্তা, আমাদের জেলে চাল দেয় তাও নিষেধাজ্ঞার শেষের দিকে তখন আমরা চাল দিয়া কি করমু আমাদের দাবি এই নিষেধাজ্ঞা যেনো সরকার কমিয়ে দেয়।
এসময় আরেক জেলে রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, আমরা যারা প্রকৃত জেলে তারা চাউল পাইনা চাল পায় যারা জেলেনা তারা, এই নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের চাল যেনো ঠিকভাবে দেয় সেই দাবি আপনাদের কাছে।
এ সময়ে জেলেদের জন্য সরকারি  প্রনোদনার ব্যাবস্থা থাকলেও তা প্রকৃত জেলের ভাগ্যে জুটছেনা।
সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ এর ধারা ৩ এর উপধারা ২ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের এ নির্দেশনা কার্যকর করতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
এ সময়ে জেলেদের প্রনোদনার জন্য জনপ্রতি ৮৬ কেজি চাল বরাদ্দ রয়েছে যা জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিতরনের কথা রয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ৮৬ কেজি চাল বিতারণ করা হবে। এবং অনিবন্ধিত জেলেদের নিবন্ধনের আওতায় আনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
রাঙ্গাবালী উপজেলায় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১২হাজার ৮২০জন। এছাড়াও আরো প্রায় ৫ হাজার সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে অনিবন্ধিত।

খবরটি ফেইসবুকে শেয়ার করুন।

© All rights reserved -2023 © /kalapararkantho.com
Design & Developed BY Hafijur Rahman Akas