রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
জিরার পানি : মসলা হিসেবে জিরার গুণের কথা সবারই জানা। রান্না করা খাবারকে সুস্বাদু ও সুগন্ধি করতে জিরার জুড়ি নেই। সেই সঙ্গে জিরা গ্যাস্ট্রিকের খুব ভালো ঘরোয়া ওষুধ। ঈদে না চাইলেও রিচ ফুড খাওয়া হয়ে যায়। যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তাদের জন্য জিরার পানি হতে পারে প্রয়োজনীয় পানীয়।
দেরিতে হজম হয় এমন খাদ্য খাওয়ার পর জিরার পানি খেলে অ্যাসিডিটি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। জিরার পানি শরীরের চর্বি নিঃসরণে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে দেহের ওজন তাড়াতাড়ি হ্রাস পায়। জিরার পানি পানের আরও একটি স্বাস্থ্যকর দিক হচ্ছে, কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যাদের এ রোগ আছে, তারা দিনে দুবার এমনিতেই খেতে পারেন।
যেভাবে তৈরি করবেন : পানি ১ লিটার, জিরার গুঁড়া ২ চা-চামচ, তেঁতুলের মাড় ২–৩ টেবিল চামচ (ঘন), আখের গুড় আধা কাপ, বিট লবণ ১ চা-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ এবং ধনিয়া বা পুদিনাপাতা কুচি একসঙ্গে মিলিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে জিরার পানি। লবণ, গুড় বা টক নিজেদের স্বাদমতো কম-বেশি করা যাবে। সঙ্গে বরফ কুচি মিশিয়ে নিতে পারেন।
আদার পানি : ঈদে মাংসসহ প্রচুর রিচ ফুড খাওয়া হয়। যা শরীরে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। এই এলডিএল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণ। যাদের শরীরে উচ্চমাত্রায় এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে, তাদের জন্য আদার পানি খুব ভালো ঘরোয়া ওষুধ। আদার পানি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে হার্টের রোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকিও কমে। যারা প্রতিদিন আদা খান, তাদের শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়া রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে আদার পানি।
আদার জল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ, যা ফ্রি ব়্যাডিকেলের হাত থেকে আমাদের শরীরকে বাঁচায় এবং ক্যানসার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। দিনে একবার আদার পানি খেলে পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং বদহজম, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, ও অ্যাসিডটি হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। তাই ঈদে আপনার খাদ্যতালিকায় আদার পানি অবশ্যই যুক্ত রাখবেন।
যেভাবে তৈরি করবেন : এক গ্লাস পানি গরম করে তাতে আধা চা-চামচ আদার কুচি মেশান। ১০ মিনিট পর ছেঁকে পান করুন। শুধু আদার পানি খেতে ভালো না লাগলে এতে লেবুর রস মেশানো যেতে পারে। স্বাদ বৃদ্ধির সঙ্গে পুষ্টিগুণও বাড়বে।
এলাচ : সাধারণত রান্নায় ভালো গন্ধ হওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় এলাচকে। কিন্তু হজমের জন্যও ব্যবহৃত হয় এলাচ। এলাচে ভোলাটাইল তেল থাকে, যা গ্যাস এবং বদ হজমের হাত থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া মুখে দুর্গন্ধ ছাড়লে এবং পেটে আলসার এড়িয়ে চলতে অবশ্যই খেতে পারেন এলাচ। খাবার খাওয়ার পরে এলাচের কয়েকটা দানা নিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া লিকার চায়ের সঙ্গে এলাচের দানা মিশিয়ে খেতে পারেন।
মৌরি : মুখের দুর্গন্ধ সরাতে মৌরির জুড়ি নেই। এটি মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর করে। খালি পেটে মৌরি খেলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা থেকেও মেলে মুক্তি। এ ছাড়া হজমশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে মৌরি।
পান : ভারতবর্ষে খাবার খাওয়ার পরে পান খাওয়ার প্রচলন সহস্র বছরের। এই পান শরীরের হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, হার্ট ভালো রাখে। তাই ঈদে মসলাদার খাবার খাওয়ার পর এক খিলি মিষ্টি পান খেতেই পারেন। তবে জর্দা অবশ্যই খাবেন না।