রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
কলাপাড়ার কন্ঠ ডেক্স।। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (২ মে) দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদানে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভা থেকে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আবহাওয়ার এই দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি লঘুচাপ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
এর আগে ২৬ এপ্রিল কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেছেন, ৮ থেকে ৯ মের মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে ১০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরদিন ১১ মে এটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। এটি ১৪ মে মধ্যরাতের পর থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সরাসরি স্থলভাগে আঘাত করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, স্থলভাগে আঘাত করার সময় এটি খুবই শক্তিশালী হবে। এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ১৪০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার। এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সবচেয়ে বড় হুমকি হবে জলোচ্ছ্বাস। ১৪ মে সন্ধ্যার পর থেকে যদি ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানা শুরু করে, তবে কমপক্ষে ১০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর ও উপকূলীয় এলাকাগুলো। ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি ও স্থলভাগে আঘাত করার সময় যদি মাত্র তিন দিন পিছিয়ে ১৭-১৮ মে হয়, তবে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। কারণ ১৮ মে অমাবস্যার রাত।
চলতি মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এ মাসের ১-৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি, তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং ৩-৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা/মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি), দেশের অন্যত্র ১-২টি মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি), মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি) ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক প্রবাহই থাকতে পারে। তবে উজানে (ভারতে) ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা হতে পারে। এতে কৃষি আবহাওয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৩-৫ মিলিমিটার এবং গড় সূর্য কিরণ ৬.৫-৮.৫০ ঘণ্টা থাকতে পারে।
গত এপ্রিল মাসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এপ্রিলে সারা দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম মাইনাস ৬৬ দশমিক ৪ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় ৪-১২ এপ্রিল পর্যন্ত মৃদু থেকে মাঝারি, ১৩-২২ পর্যন্ত মাঝারি থেকে তীব্র, ২৪-৩০ পর্যন্ত মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। ঢাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২৭ এপ্রিল ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।